প্রফেসর অলোক কুমার ব্যানার্জী
সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলায় দীর্ঘদিন কোন কলেজ প্রতিষ্ঠা না হওয়ায় এবং দেবহাটা উপজেলা কার্যালয় ভারত সীমান্তের গাঁ ঘেষে অবস্থিত হওয়ায় ১৯৮৫ সালে উপজেলাবাসীর চাহিদা মোতাবেক সকলের যাতায়াত ও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সার্বিক সুবিধার্থে উপজেলার সুবিধাজনক যাতায়াতের উত্তম ব্যবস্থাসহ মাঝ বরাবর সাতক্ষীরা-মুন্সিগঞ্জ প্রধান সড়কের গাঁ ঘেষে পূর্ব ধারে প্রাক্তন ইউপি চেয়ারম্যান ও নলতা কেন্দ্রীয় আহছানিয়া মিশনের সেক্রেটারী জনাব আব্দুল মজিদ সাহেব তার প্রদানকৃত জমিতে প্রাক্তন এমপি ও সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মুনছুর আহমেদ ও তৎকালীন সময়ের উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শাহজাহান মাস্টারের সহযোগিতায় এবং দেবহাটা উপজেলা প্রশাসন ও সর্বস্তরের মানুষের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় খানবাহাদুর আহছানউল্লা কলেজটি প্রতিষ্ঠিত করেন। এলাকার গণমানুষের একান্ত প্রাণের দাবী অনুযায়ী বৃটিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলা ও আসামের শিক্ষা বিভাগের এ্যাসিস্ট্যান্ট ডাইরেক্টর, প্রখ্যাত শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারক, সুফী সাধক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরীর নেপথ্যের কারিগর, যিনি দেশের স্বনামধন্য বেসরকারী সংস্থা ঢাকা আহছানিয়া মিশন প্রতিষ্ঠা করেন, যার মাধ্যমে দেশে আজ ঢাকা আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা আহছানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতাল, আহছানউল্লা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, আহছানিয়া মিশন মাদকাসক্ত নিরাময় ও পূনর্বাসন কেন্দ্র, আহ্ছানিয়া মিশন মেডিকেল কলেজ এবং তাঁর হাতে প্রতিষ্ঠিত নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের মাধ্যমে আহছানিয়া মিশন রেসিডেন্সিয়াল কলেজ, আহছানিয়া মিশন চক্ষু ও জেনারেল হাসপাতাল নির্মাণ, সেই প্রখ্যাত সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব অত্র এলাকার কৃতি সন্তান খানবাহাদুর আহছানউল্লা (রহঃ) এর স্মৃতি রক্ষার্থে অত্র প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় ‘খানবাহাদুর আহছানউল্লা কলেজ’। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সরকারের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক এমপি মহোদয়ের প্রচেষ্টায় কলেজটি জাতীয়করণ কাজে এগিয়ে যায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে প্রেরিত পত্র নং- ০৩.০০১.০০০.০০.০০.০১.২০১৬-৩২ তারিখ : ২৮/০৬/২০১৬ খ্রি:, খানবাহাদুর আহ্্ছানউল্লা কলেজটিকে জাতীয়করণের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সানুগ্রহ অনুমতি পাওয়া যায়। পরবর্তীতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং- ৩৭.০০.০০০০.০৭০.০০২.০০৪.২০১৮-৮৩ তারিখ: ১২ আগষ্ট ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ এর প্রজ্ঞাপনে ২০১৮ সালের ৮ইং আগষ্ট খ্রি: তারিখ থেকে কলেজটিকে জাতীয়করণ করা হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সাহসী পদক্ষেপের জন্য আমরা খানবাহাদুর আহ্্ছানউল্লা কলেজ পরিবার ও সর্বস্তরের জনগণ তাঁর প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। কলেজটিতে বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক (বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিএম শাখা) সহ স্নাতক (বি.এ, বি.এস.সি, বি.বি.এস, বি.এস.এস) পাস ও ০৬ (ছয়) টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু আছে। বর্তমানে কলেজের সর্বমোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩,৪৮২ জন। পাবলিক পরীক্ষার পাশের হার বরাবরই সন্তোষজনক। প্রতি বছর এখানকার শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তি পরীক্ষায় উন্নীত হয়ে কলেজের সুনাম ধরে রাখছে। সরকারি খানবাহাদুর আহছানউল্লা কলেজটিতে শিক্ষক-কর্মচারীর পদ সৃজন হলে শিক্ষার মানোন্নয়নসহ কলেজের পঠন-পাঠন কার্যক্রম আরো বেগবান হবে, প্রতিষ্ঠানটি পাবে আরও পূর্ণতা। অপরপক্ষে এই অঞ্চলের ব্যাপক অংশের মেধাবী ও যোগ্য শিক্ষার্থীরা পাবে তাদের মেধা, মনন ও মুক্ত চিন্তা বিকাশের একটি নির্ভরযোগ্য মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পদগুলো দ্রুত সৃষ্টি হলে কলেজের একাডেমিক কার্যক্রমের উন্নতি হবে। ক্লাসের গুণগতমান গতিশীল হবে যা সার্বিক শিক্ষার মানোন্নয়নে আরো বেশী সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
পরিশেষে পদগুলো দ্রুত সৃজিত হলে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ভিশন মানসম্মত শিক্ষা, উন্নত জাতিগঠন, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর সোনার বাংলা গঠন স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটবে।